যখন আমাদের বাংলাদেশের কোনো একজন মাস্টার পিটিয়ে তার একজন ছাত্রের পাছা লাল করে দেন, আমরা সকলে সমস্বরে বলে উঠি, ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
যখন কোনো ডাক্তার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় চিকিৎসা সেবা প্রদানে শর্ত জুড়ে দেন, আমরা সকলে সমস্বরে বলে উঠি, ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
যখন কোনো ব্যাংকার কদাচিৎ কোনো একজন গ্রাহকের টাকা চুরি করেন, আমরা সকলে সমস্বরে বলে উঠি, ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
এমন মাস্টার, ডাক্তার, ব্যাংকারের ঘটনা কদাচিৎ ঘটে। মাস্টার, ডাক্তার, ব্যাংকার শ্রেণির মানুষগুলো দায়িত্ব অনুযায়ী সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই সেবাদান আমাদের কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার। অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে তাদের উপর ঢেলে দিই 'ছিঃ ছিঃ ছিঃ'।
সরকারদলীয় রাজনীতিকেরা যখন অসহায় মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণসামগ্রী চুরি করেন, তখন কোনো একজন সরকারদলীয় নেতার ত্রাণসামগ্রী বিতরণের ছবি দেখে আমরা সমস্বরে বলে উঠি, আহ্ হা, দুনিয়াতে ভালো মানুষ এখনও আছে। যেসব অস্বাভাবিক ঘটনাগুলোর জন্য ছিঃ ছিঃ ঢেলে দিই আমরা, সে সবই যেন দায়িত্বে পরিণত হয়েছে তাদের। তাইতো তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যখন কেউ পালন করে সেগুলো ব্যতিক্রম বলে মনে হয়। তাইতো আমরা ঘটা করে বাহবা দিই তাদের।
আমাদের পুলিশ ভাইয়া,
তোমরা যখন আমার বৃদ্ধ পিতাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ভরেছো, তখন আমি তোমাদের প্রতি 'ঘৃণা ও ছিঃ ছিঃ' মজুদ করেছি আমার ভাড়ারে।
যখন তুমি আমার ভাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করেছো, তখন আমি তোমাদের প্রতি 'ঘৃণা ও ছিঃ ছিঃ' মজুদ করেছি আমার ভাড়ারে।
যখন হারকিউলিস সেজে ধর্ষককে হত্যা করো ঠিক তখন তোমাদেরই দু'জন সদস্য আমার একজন বোনকে ধর্ষণ করে জনতার হাতে আটক হলে তোমাদেরই বড়বাবু বড় হারকিউলিস সাহেব থানার কয়েক প্লাটুন সদস্য নিয়ে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে কোনো মামলা না দিয়ে তাদেরকে নিরাপদ করেন, তখন আমি তোমাদের প্রতি 'ঘৃণা ও ছিঃ ছিঃ' মজুদ করেছি আমার ভাড়ারে।
আজ করোনায় তোমাদের উপর বিশেষ দায়িত্ব এসে পড়েছে। তোমরা সেগুলো পালন করছো। এর মাঝে দেখলাম ইতালি-ফেরত এক ব্যক্তির কাছে লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছো, এটাও তোমাদেরই দায়িত্ব বটে। তোমাদেরকে আজ ঘটা করে বাহবা দিতে ইচ্ছে করছে।
ওহে রাজনীতিক ও পুলিশ ভাইয়া,
তোমাদের পাগুলো একটুখানি কষ্ট করে সামনে তুলে ধরো, আমার জিহ্বাটা লকলক করছে, একটু চেটে দিই।
-ইসলামুল হক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন