শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩

বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতি: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী'র চুরির ধরণ ও প্রকরণ

১৯৭৭ সালে 'বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতি' প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির মাওলানা আবুল কালাম মোহাম্মদ ইউসুফ। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯২ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তর ও ২০০৫ সালে এনজিও ব্যুরো অ্যাফেয়ার্স থেকে নিবন্ধন লাভ করে। গঠনতান্ত্রিকভাবে এটি অরাজনৈতিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদিত হলেও প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর যাবতীয় কার্যক্রম জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলকে চিঠির মাধ্যমে লিখিতভাবে অবহিত করা হতো।


আমি তখন ছোট ছিলাম। ১৯৯৮ সালে বড় ওয়ানে পড়তাম। 'বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতি' ঝিনাইদহ জেলা শাখায় যুক্ত হন আমার বাবা। নিয়মিত সঞ্চয় জমা করা হয়। আমাদের কানাইডাঙ্গা গ্রামের প্রত্যেক পরিবার থেকে কমপক্ষে ১/২ জন সদস্য এই সমিতিতে যুক্ত হয়। আমাদের পরিবারের ৬ জন সদস্যই যুক্ত হই। আমার নামের 'সঞ্চয়ী পাস বই'টা প্রতিদিন কয়েকবার করে মেলে ধরতাম- পাতা উল্টিয়ে দেখতাম। কারণ, আমার নামেই সবচেয়ে বেশি টাকা জমা করেছিলেন আব্বা। তখন হিসাবগুলো বুঝতাম না। ১৯৯৯-এ ক্লাস টু'তে উঠলাম। তখন বেশ বুঝতে পারতাম। না বুঝলে অবশ্য মেজো ভাইকে জিজ্ঞেস করতাম- তিনি বুঝিয়ে দিতেন। মেরুন কালারের পাঞ্জাবি পরা দাড়িওয়ালা একজন লোক সঞ্চয়ের টাকা নিতে আসতেন (তার নাম আব্দুল হাকিম)। তখন আব্বার সাথে আব্দুল আওয়াল মামাও উপস্থিত থাকতেন। আব্দুল আউয়াল মামা এবং আব্দুল হাই মামা ঐ সময়ের সম্পূর্ণ ঘটনা জানেন। তাছাড়া আমাদের গ্রামের অনেকেই এই ঘটনা বিস্তারিত জানেন। 

নির্দিষ্ট মেয়াদে সঞ্চয়ের টাকা জমা দেয়া হয়ে গেল। নির্দিষ্ট সময় পর সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পেতে অফিসে যোগাযোগ করা হলে টাকা দিবে বলে ঘোরাতে লাগলো। ঝিনাইদহের হাটের রাস্তায় ছিল 'বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতি ঝিনাইদহ জেলা শাখা'র প্রধান কার্যালয়। অনেক ঘোরাঘুরির পরেও যখন তারা টাকা দিলো না তখন 'জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ঝিনাইদহ জেলা শাখা'য় অভিযোগ জানানো হয়। আমাদের পরিবারের সঞ্চয়ের টাকার পরিমাণ ছিল প্রায় ৮০,০০০(আশি হাজার টাকা)। গ্রামের সকল গ্রাহকের টাকাসহ মোট টাকার পরিমাণ আড়াই লক্ষের (২৫০০০০+) উপরে। 'জামায়াতে ইসলামী' সংগঠন থেকে মাত্র ১৫০০ (এক হাজার পাঁচশত) টাকা প্রদান করে সান্তনা দেওয়া হয়। আর গ্রামের যারা সঞ্চয়ের টাকা পেতেন তাদের টাকা পরিশোধ করেছিলেন আমার আব্বা। আব্বা আর মেজো ভাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাইস মিল চালিয়ে ধান ভানার মাধ্যমে তাদের টাকা পরিশোধ করেছিলেন। গ্রামে আত্মীয় স্বজনদের অনেকেই সেই টাকা নেননি এখনও; যেমন -মোড়ল নানাদের পরিবার। 
এই হল 'বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতি' যার পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন জামায়াত নেতৃবৃন্দ।

এখন আমি যদি আমার বাপের সঞ্চয়ের টাকা চুরি করা বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতির সেইসব জামায়াত নেতৃবৃন্দের ছবি দেখতে চাই, তাহলে কি আমার পাপ হবে? থুক্কু, মহাপাপ হবে? 

হ্যাঁ। জামায়াতের লোকদের দৃষ্টিতে এটা পাপ তো বটেই, মহাপাপও। এজন্য আমার গিরা-গাট্টা কিছু থাকবে না (তাদের বক্তব্য অনুযায়ী)। 

শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এএসএম মোজাম্মেল হক: একজন জালিম শ্বশুর কর্তৃক জামাতার সম্পত্তি আত্মসাতের এক উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি।

হক সমাচার -

এস এম মোজাম্মেল হক। সাবেক সাংসদ, সংসদীয় আসন-৮৩, ঝিনাইদহ-; দল: জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ (বর্তমান নাম: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি) ত্রিশোর্ধ প্রায় সকলেই তাকে  চিনেন। বৃহত্তর যশোরের বয়স্কদের সকলেই তাকে চিনেন। সম্পর্কে তিনি আমার নানা, অর্থাৎ আমার মায়ের পিতা এবং আমার বাবার শশুর।

আমার বাবা আমার দাদা থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তি বিক্রি করে সে টাকা আমার বাবা তার শ্বশুরের হাতে তুলে দিয়েছিলেন এজন্য যে তিনি যেন এখানে অর্থাৎ নানার গ্রামে জমি ক্রয় করে দেন। কিন্তু তিনি তার জামাতাকে কোন জমি ক্রয় করে দেননি এবং সেই টাকাগুলোও ফেরত দেননি।

একদিন বারান্দায় বসে বিভিন্ন ধরনের গল্প হচ্ছিল। আব্দুল কাদের চাচা একটা ঘটনা বলছিলেন। ঘটনাটি সামন্তা এলাকার আলতাফ ডাক্তারকে নিয়ে। আলতাফ ডাক্তারের এলাকার কিছু লোক শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলো আমার চাচার এলাকায়। তারা কথাবার্তার মধ্যে এক সময় বলছিল যে তাদের এলাকায় অর্থাৎ সামন্তা এলাকায় একজন ভালো মানুষ ছিল। অনেক বছর পর তার কবর ভেঙে গেলে দেখা যায় যে তার লাশটি অক্ষত রয়েছে। তিনি হলেন আলতাফ ডাক্তার। তখন চাচা বলে উঠলেন তার লাশ অক্ষত থাকতেই পারে না। কারন সে আমাদের ৩৫ বিঘা জমি বিক্রি করা টাকা নিয়ে আর ফেরত দেয়নি। সুতরাং তার লাশ অক্ষত থাকতেই পারে না। যদি অক্ষত থাকে তাহলে সে নিশ্চিত ফেরাউন। কথাগুলো শোনার সময় আমি আমার বাবা-মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। বাবা নির্বিকারভাবে এক দিকে তাকিয়ে বসে ছিলেন। মায়ের চাহনি দেখে আমার কিছুটা সন্দেহ হল। আমি আমার বাবাকে জিজ্ঞাসা করলাম ঘটনাটা সত্য কিনা। তিনি কোন কিছুই বললেন না। পরে মাকে জিজ্ঞাসা করলাম। মা বললেন, "তোর চাচা পরের ঘটনাগুলো জানে না। মা বললেন যে, আলতাফ ডাক্তার পুরো টাকা ফেরত দিয়েছিল তোর বাপের হাতে। তোর বাপ সেই টাকা তোর নানাকে দিয়েছিল আমার নিষেধ সত্ত্বেও। তোর নানা সেই টাকা আর ফেরত দেননি।" শশুরের সম্মান বাঁচাতে সত্য প্রকাশে নীরব থেকে একজন নিরপরাধ মানুষকে দোষী বানানো অন্যায়। আমার চাচা না জানার কারণে আলতাফ ডাক্তার সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছিলেন তা একদমই সঠিক নয়। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।

পরবর্তীতে আমার বাবা তার গ্রামের সম্পত্তি বিক্রি করে কানাইডাঙ্গাতে বেশ কিছু জমি কিনেছিলেন। গওহর মোল্লা নানার কাছ থেকে আমার বাবা জমি কিনেছিলেন। সেই জমি আমার নানা অর্থাৎ আমার পিতার শশুর বিক্রি করে খেয়েছিলেন। যাদের কাছে বিক্রি করেছিলেন তারা যখন জমির দখল নিতে আসে, আমার বাবা বলেছিলেন আমার জমি তোমরা কেন দখল নিতে এসেছ। তখন তারা বলেছিল আপনার শ্বশুরের কাছ থেকে এই জমি আমরা কিনে নিয়েছি। শশুরের সম্মান বাঁচাতে সেই জমি তাদেরকে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছিলেন আমার বাবা। পুরান পাড়ার মাঠে আরো কিছু জমি ছিল। সেগুলোও আমার নানা বিক্রি করে খেয়েছিলেন হাফেজ বদিউজ্জামান নানার কাছে। কামরুজ্জামান মামা যখন মসজিদে জমির বিষয়ে ঘোষণা দেওয়ার কথা বলেছিল তখন আমার বাবা তার শ্বশুরের সম্মান বাঁচাতে সেই জমি তাদেরকে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছিলেন। আমার পিতার টাকায় কেনা বড় পুুকুরটি আমার পিতার নামে রেজিস্ট্রি করার পরিবর্তে তারা রেজিস্ট্রি করেছিল আমার নানির নামে। সেটিও তারা আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে নানি যখন বড় পুকুরটি আমার বাপের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে সম্মত হয় তখন আবুল হাসেম খালু ছিলেন প্রধান অন্তরায়। তিনি ফতোয়া দিয়েছিলেন পুকুরের জমি লিখে না দেওয়ার জন্য। এই ধরনের বে-ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারীদের কাছ থেকে ইলম গ্রহণ করা বৈধ হবে কি না আলিমগণ ভালো বলতে পারবেন। সকল বে-ইনসাফকারীদের বিচার একদিন হবেই, ইনশাআল্লাহ।

পুকুরের মধ্যে আমাদের বাড়ির জমিটুকু পুনরায় পুনরায় কিনে নিতে হয়েছিল। ওই জমির জন্য দুই দুই বার করে দাম পরিশোধ করা হয়েছিল, তারপরে সম্পদ আত্মসাৎকারী শ্বশুর তার জামাতাকে ওই জমিটুকু রেজিস্ট্রি করে দিয়েছিলেন। আমার নানার কাছ থেকে বিঘা জমি কিনেছিলেন আমার বাবা। ছোটবেলা থেকে জানি আমাদের দুই বিঘা জমি আছে। এখন জানি সেই জমি পরবর্তীতে এক বিঘা চার কাঠা রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে, বাকিটুকু দেয়নি। নানার বাড়ীর পুকুর কাটা হয়েছিল আমার পিতার টাকায়। আরো যে কত ঘটনা আছে, আমার বাবা-মা যদি বলতেন তাহলে জানতে পারতাম।

বাপ-দাদার সম্পত্তির ফারায়েজ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অবিচার আমাদের দেশে ডাল ভাতের মত। কিন্তু একজন শ্বশুর কর্তৃক জামাতার সম্পত্তি আত্মসাতের এমন জঘন্য নজির সত্যিই বিরল।

এস এম মোজাম্মেল হক তো সেই ব্যক্তি যিনি তার লোকজনকে দিয়ে শ্বশুরের ঘাড়ে কোপ দিয়েছিলেন। এস এম মোজাম্মেল হক তো সেই ব্যক্তি যিনি তার জামাতার সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছেন। 


হক সমাচার -২
"তাওহীদুল ইসলামঃ একজন জালিম পিতার চরিত্রহীন (ধর্ষক) সন্তান"। তাওহীদ (বর্তমানে ভদ্রবেশী প্রফেসর সাহেব) একজন অবিবাহিত মেয়েকে ধর্ষণ করে পোয়াতী বানিয়েছিল।

বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতি: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী'র চুরির ধরণ ও প্রকরণ

১৯৭৭ সালে 'বাংলাদেশ চাষী কল্যাণ সমিতি' প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির মাওলানা আবুল কালাম মোহ...